ব্রিটিশ ভারতে সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কার (Social and religious reforms in British Period)

ব্রাহ্মসমাজ :

  • ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমােহন কলকাতায় ব্রহ্ম সভা স্থাপন করেন।
  • ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ব্রহ্মসভার নাম হয় ব্রাহ্মসমাজ।

পরমহংসমন্ডলী :

  • ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে বােম্বাইয়ে পরমহংসমন্ডলী স্থাপন করেন আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ।
  • রাম বালকৃষ্ণ জয়াকার ছিলেন পরমহংসমন্ডলীর প্রথম সভাপতি।
  • পুনা, আহম্মেদনগর এবং রত্নগিরিতে এই মন্ডলীর শাখা গড়ে ওঠে।
  • জাতিভেদ প্রথা নিষিদ্ধ করা, মূর্তিপূজা, ধর্মীয় রীতিনীতি ও ব্রাহ্মণদের আধিপত্য খর্ব করাই ছিল এই মন্ডলীর প্রধান উদ্দেশ্য।

প্রার্থনা সমাজ :

  • পরমহংস সভা থেকেই ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রার্থনা সমাজের আবির্ভাব ঘটে।
  • ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে মহাদেব গােবিন্দ রাণাড়ে এবং আর.জি.ভান্ডারকর প্রার্থনা সমাজে যােগ দেন।
  • মহাদেব গােবিন্দ রাণাডে প্রার্থনা সমাজের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য বিধবা বিবাহ সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে।
  • ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন “দাক্ষিণাত্য সমিতি” |
  • প্রতাপচন্দ্র মজুমদার ‘শুবােদ্ধ’ পত্রিকা প্রকাশ করেন।
  • এস.পি. কেলকার বােম্বাইয়ে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।
  • ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে বিথল রামজি শিন্ডে ‘ডিপ্রেস্ট ক্লাস মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।

আর্য সমাজ :

  • ২৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে আর্যসমাজ স্থাপন করেন স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী।
  • আর্য সমাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল শুদ্ধি আন্দোলন।
  • আর্য সমাজ উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাট ও পাঞ্জাবে ছড়িয়ে পড়ে প্রভাব বিস্তার করে।
  • ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে আর্যসমাজ দুটি ভাগে ভাগ হয়।
  • একটি ভাগ স্বামী শ্ৰদ্ধানন্দের নেতৃত্বে ‘গুরুকুল সম্প্রদায় এবং অপরটি লালা লাজপত রায় ও লালা হংসরাজ-এর নেতৃত্বে দয়ানন্দ অ্যাংলাে বৈদিক সম্প্রদায় (DAV Section)।
  • ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে স্বামী শ্ৰদ্ধানন্দ বা লালা মুন্সীরাম হরিদ্বারে গুরুকূল আশ্রম স্থাপন করেন।
  • ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে লালা হংসরাজ লাহােরে দয়ানন্দ অ্যাংলাে বৈদিক কলেজ স্থাপন করেন।
  • লাহােরে আর্যসমাজের প্রধান কমিটিকে বলা হত ‘অন্তরঙ্গ সভা’।
  • আর্যসমাজের সদস্যরা গােরক্ষা সমিতি প্রতিষ্ঠা করে গােহত্যার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন।

থিওসফিক্যাল সােসাইটি :

  • ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে মাদাম হেলেনা পেট্রোভা ব্লাভাটস্কি (একজন মহিলা) এবং হেনরি স্টিল ও ওয়ালকট (একজন আমেরিকান) নিউইয়র্কে থিওসফিক্যাল সােসাইটি স্থাপন করেন।
  • ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে ব্লভাটস্কি ‘I sis Unviled’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন।
  • ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁরা ভারতে আসেন। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজের নিকট আদিয়ার নামক স্থানে প্রধান কেন্দ্র স্থাপন করেন।
  • ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে আইরিশ মহিলা অ্যানি বেসান্ত ভারতে আসেন এবং থিওসফিক্যাল সােসাইটিতে যােগ দেন।
  • ব্লাভাটস্কির সঙ্গে তিনি ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে লুসিফার (Lucifar) নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন।
  • ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে অ্যানি বেসান্ত বারাণসীতে সেন্ট্রাল হিন্দু স্কুল স্থাপন করেন যেটি পরবর্তীকালে মদনমােহন মালব্যের তত্ত্বাবধানে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
  • ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে কর্নেল ওয়ালকটের মৃত্যুর পর অ্যানি বেসান্ত থিওসফিক্যাল সােসাইটির প্রেসিডেন্ট হন।
  • ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে অ্যানি বেসান্তের মৃত্যুর পর জর্জ অরুনডেল থিওসফিক্যাল সােসাইটির প্রেসিডেন্ট হন।
  • থিওসফিক্যাল সােসাইটির প্রথম ভারতীয় প্রেসিডেন্ট হন ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে সি. জিনরাজ দাশ।

মানবধর্মসভা :

  • মানবধর্মসভা প্রতিষ্ঠা করেন পান্ডুরঙ্গ ও দুর্গারাম মাঞ্জোরাম।
  • ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে দাদবা পাড়ুরঙ্গ ‘ধর্মবিবেচন’ বলে একটি নীতি প্রবর্তন করেন।
  • মানবধর্মসভার অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন দিনমনি শঙ্কর, দলপিত্রম ভাগ্যবাই এবং দামােদর দাস।
  • মানবধর্মসভা সুরাটে প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে। প্রতি রবিবার এদের আলােচনা সভা হত।